Sunday, August 18, 2013

juice decoration


জুস সাজাবার ছোট্ট ছাতাটি

একটা কথা প্রচলিত আছে- ‘প্রথমে দর্শনধারী পরে গুণ বিচারী’।
এইজন্যই হয়তো সারা বিশ্বে খাবার সাজানোর এতো আয়োজন। বিশেষ করে পানীয়কে আকর্ষনীয় করে সাজাতে অনেক কিছুই ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে কাগজের তৈরী ছোট ছাতা অন্যতম।
বড় বড় লাউঞ্জ বা ক্যাফে গুলোতে জুস খেতে গেলে অনেকেই হয়তো ছোট্ট ছাতাটি সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে এসেছেন। এত সুন্দর ছোট্ট রঙিন ছাতাটা কি আর ফেলে আসা যায়! এই ছাতাটি এখন আপনি নিজের হাতেই বানিয়ে নিতে পারবেন সহজেই। ঘরের পার্টিতেই জুস সাজাতে নিজের হাতে বানিয়ে ফেলতে পারবেন ছাতা। আসুন দেখে নেয়া যাক কি কি লাগবে জুস সাজানোর ছোট্ট ছাতাটি বানাতে।
উপকরণঃ
শক্ত রঙিন কাগজ (আর্ট পেপার)
কাঁচি
গ্লু স্টিক
টুথপিক
প্রস্তুত প্রণালীঃ
  • কাঁচি দিয়ে বৃত্তের আকৃতিতে গোল করে কাগজ কেটে নিন।
  • এরপর বৃত্তের পরিধির ১/৮ ভাগ কেটে ফেলুন।
  • এরপর কাগজটিকে মুড়িয়ে কোনের আকৃতি দিন।
  • খোলা ২ মাথা একসাথে গ্লু দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিন।
  • এবার কোনের ভেতরের দিকের সূচালো মাথায় গ্লু লাগিয়ে টুথপিক গেঁথে দিন।
  • গ্লু শুকানোর সময় দিন।
  • গ্লু শুকিয়ে গেলে জুস সাজাতে ব্যবহার করুন রংবেরঙের ছাতা।
অবসর পেলেই বানিয়ে ফেলুন ছোট ছোট ছাতা। বাসায় মেহমান দাওয়াত দিলে জুসের সাথে সাজিয়ে দিন একটি করে ছাতা। আপনার খুব সাধারণ জুস ও অসাধারণ হয়ে উঠবে মেহমানের কাছে। তাই দেরী কীসের? আজই বানিয়ে ফেলুন কাগজের রঙিন ছাতা।


Sunday, August 4, 2013

ghee


ঘরেই তৈরি করুন খাঁটি ঘি


মজাদার কোন খাবার রাঁধবেন আর তাতে ঘি দেয়া হবে না তা কি হয়? মোঘলাই থেকে শুরু করে দেশি খিচুড়ি সব কিছুতেই অল্প একটু ঘি দিলে স্বাদটাই বদলে যায় আমূল। এছাড়া গরম ধোঁয়া উঠা ভাতের সাথে ঘি দিয়ে খাননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। কিন্তু চাইলেই কি সব সময় ভাল ঘি পাওয়া যায়? যায়না। বাজারেও যেসব ঘি পাওয়া যায় তা আসলেই কতটা মানসমত্ব সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছেই। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে যেই ঘি এর জুড়ি মেলা ভার সেই ঘি যদি বাসাতেই তৈরি করতে পারেন তবে কেমন হয়? আপনাদের সুবিধার জন্যই আজকে ঘি তৈরির প্রনালি দেয়া হল।
উপকরনঃ
দুধের সর- ৫ কেজি পরিমাণ
ঠাণ্ডা পানি- ২.৫ লিটার
ঘি তৈরির জন্য যা লাগবে-
মাটির পাত্র বা মালশা- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য)
শিল-পাটা- (সর বাটার জন্য)
কাঠের চামচ বা খুন্তি- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য)
প্রনালিঃ
১. প্রথমে দুধের সর নিয়ে নিন আর দুধের সর বাটার জন্য একটি পরিষ্কার শিল-পাটা নিন। এরপরে দুধের সর অল্প পরিমাণে করে শিল-পাটাতে নিয়ে বাটতে থাকুন। বাটার সময় পানি দেয়া যাবেনা। সরের পরিমাণ যেহেতু বেশি তাই একবারে সবটুকু একসাথে বাটতে যাবেন না। অল্প অল্প করে সর নিয়ে বেটে নিতে হবে।
২. এবার একটি মাটির পাত্র বা মালশা নিয়ে নিন। তাতে বাটা সর থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে কাঠের চামচ বা খুন্তি দিয়ে ঘুটতে থাকুন। এই প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব ততো দ্রুত করতে হবে।
৩. ভাল করে ঘুটা হয়ে গেলে সর থেকে ক্রিম তৈরি হবে। এভাবে বাকি সর থেকেই ক্রিম তৈরি করে নিন।
৪. ক্রিম তৈরি হয়ে গেলে এর মধ্যে ঠাণ্ডা পানি দিতে হবে। ক্রিমের পরিমাণ অনুযায়ী পানি দিতে হবে।পানি দিয়ে ঘুঁটার পরে ক্রিম থেকে সাদা দুধের মত পানি বের হয়ে ক্রিম পরিষ্কার হয়ে ঘন ডো এর মত উপরে ভেসে উঠতে থাকবে। যখন ক্রিমের সবটুকু ডো পরিষ্কার হয়ে পানির উপরে উঠে আসবে তখন পানি থেকে ক্রিম ছেকে তুলে নিন এবং পানি ফেলে দিন। একবারে করা সম্ভব না হলে কয়েকবারে করতে হবে।
৫. এবার সবটুকু ক্রিমের ডো একটি পাতলা মসলিন কাপড়ের মাঝখানে রেখে ভাল করে বেধে ঝুলিয়ে দিন। এভাবে ঝুলিয়ে রাখলে ক্রিমের ডো থেকে সম্পূর্ণ পানি বের হয়ে যাবে। এভাবে কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘণ্টা রাখতে হবে।
৬. ক্রিমের ডো থেকে সম্পূর্ণ পানি বের হয়ে গেলে একটি লোহার কড়াই চুলায় দিয়ে গরম করে নিন। খেয়াল রাখবেন যেই পাত্রে ঘি তৈরি হবে তা যেন সম্পূর্ণরুপে পরিষ্কার থাকে।
৭. এবার গরম পাত্রে ক্রিমের ডো ঢেলে দিন। ডো দেয়ার পরে চুলার আঁচ কমিয়ে মধ্যম আঁচে রাখুন। ক্রিম চুলায় দেয়ার পরে অনবরত নাড়তে থাকুন। বেশ কিছুক্ষন নাড়ার পরে ক্রিম জ্বাল হয়ে তার মধ্যে থেকে তেল বের হতে থাকবে। এই তেলটাই হল আপনার কাঙ্ক্ষিত ঘি। তবে এখনও সম্পূর্ণরুপে ঘি তৈরি হইনি কিন্তু। সবটুকু ক্রিম যখন পুড়ে গিয়ে কালো হয়ে যাবে সেই সাথে ঘি গাড় হয়ে সুন্দর সোনালি রং ধারন করবে ও তা থেকে সুন্দর সুগন্ধ ছড়াবে তখন বুঝতে হবে এবার আপনার ঘি তৈরি হয়ে গেছে।
৮. এবার একটি পরিষ্কার ও শুকনা পাত্রে ঘি ছেঁকে নিতে হবে। ছাকার সময় খেয়াল রাখবেন পোড়া অংশ যেন ঘিয়ের মাঝে চলে না যায়।
৯. পাত্রের ঘি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বোতলে ভোরে ফেলুন এবং ফ্রিজারে করে সংরক্ষন করুন। এভাবে সংরক্ষন করলে আপনার বানানো ঘি অনেকদিন পর্যন্ত ঠিক থাকবে।
* আপনার সর ঘুঁটানো ও ক্রিম জ্বাল দেয়ার উপরে নির্ভর করবে আপনি কতখানি ঘি তৈরি করতে পারবেন। তবে ৫ কেজি দুধের সর থেকে ১ থেকে দেড় কেজি মত ঘি তৈরি করা সম্ভব।
সতর্কতাঃ
ঘি প্রস্তুত করার আগে খেয়াল রাখবেন সর শিল-পাটাতেই বাটতে হবে। ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করতে পারেন, তবে তা বাটা সরের মত মোলায়েম হবেনা। সেই সাথে মাটির পাত্রই ব্যাবহার করবেন। স্টিল বা অন্যান্য তৈজসপত্র ব্যাবহার করলে ক্রিম নষ্ট যেতে পারে। সেই সাথে পানি ছেকে নিতে হবে ভাল করে যেন কড়াইতে দেয়ার সময় পানি না থাকে ক্রিমের মধ্যে একটুও।
ঘি আমাদের দেশি রান্নায় সেই সাথে যেকোনো বাহারি খাবারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ঘি এর মান ভাল হলে রান্নার স্বাদ এমনিতেই অনেক ভাল হয়ে যায়। তবে এই ঘি তৈরির প্রক্রিয়াটি সহজ নয়। ঘি তৈরির আগে খেয়াল রাখবেন এটা তৈরি করার জন্য অনেক সময় ও শক্তি আপনাকে দিতে হবে এর পিছনে। কিন্তু সব কষ্ট শেষে যখন নিজের হাতে তৈরি ঘি এর স্বাদ গ্রহন করবেন তখন আপনার সব কষ্ট সফল হয়ে যাবে।

ICE-CREAM(আইসক্রিম)


এই গরমে যদি আপনি ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলেন হরেক রকমের মজাদার আইসক্রিম, তাহলে কেমন হয় বলুনতো ? শুনেই জিভে জল এলো, তাই না । আসুন তবে, খুব সহজে বানানো যায় এমন কিছু ঘরোয়া আইসক্রিমের গোপন রহস্য জেনে নেই এবার।

ভ্যানিলা আইসক্রিম

উপকরণ: ভ্যানিলা নির্যাস, দুধ, চিনি, তাজা ক্রিম এবং কর্ণ ফ্লাওয়ার
পদ্ধতি: দুধ ফুটিয়ে নিন। নিজের স্বাদ অনুযায়ী চিনি ও কর্ণ ফ্লাওয়ার মেশান। পাঁচ মিনিট পর নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। এবার ফ্রেশ ক্রিম এবং ভ্যানিলা নির্যাস/এসেন্স যোগ করুন। যদি পছন্দমত রং যোগ করতে চান, তাও করতে পারেন। একটি এয়ার টাইট ফুড গ্রেড বক্সের/কন্টেইনারে মধ্যে মিশ্রণটি ঢেলে ফ্রীজারে জমতে দিন। ব্লেনড করার মত শক্ত থাকা অবস্থায় মিশ্রটি বের করে নিন। মসৃণ না হওয়া পরজান্ত ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। ব্লেন্ড করা হলে আবারও কন্টেইনারে করে ফ্রিজে রাখুন, জমে গেলে পরিবেশন করুন। আইসক্রিমের স্কুপের উপরে একটু চকলেট সিরাপ দিয়ে তার উপর কিছু মজাদার জেমসের টুকরো ছিটিয়ে দিয়ে একদম রেডি আপনার হাতে বানান ঘরের ভ্যানিলা আইসক্রিম

পান আইসক্রিম

নতুন কিছু চেষ্টা করবেন? আসুন এবার আমরা বানাই পান ফ্লেভারড আইসক্রিম।
উপকরনঃ পান পাতা ,দুধ,চিনি, ফ্রেশ ক্রিম, কর্ণ ফ্লাওয়ার, শুকনো খেজুর, এবং ছোটো এলাচ দানার গুড়া।
পদ্ধতিঃ
পান পাতা ভাল করে ধুয়ে মিক্সচারে এর জুস বের করে নিন। এই জুসের সাথে যোগ করুন শুকনো খেজুর আর ছোটো এলাচ গুঁড়া পাউডার। এবার দুধ ফুটিয়ে তার সাথে চিনি ও কর্ণ ফ্লাওয়ার যোগ করে ঠাণ্ডা হতে দিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আগে থেকে তৈরি করে রাখা পানের জুস এর মিশ্রণ এর সাথে যোগ করুন। এর পর আগের পদ্ধতি আনুসরন করে একে ফ্রীজারে জমান। বের করে ব্লেন্ড করে আবার ও জমতে দিন। এবার রেডি আপনার একবারেই নতুন স্বাদের পান আইস ক্রিম।

স্ট্রবেরি আইসক্রীম

উপকরণ: স্ট্রবেরি পিউরি, দুধ, চিনি, ফ্রেশ ক্রিম, কর্ণ ফ্লাওয়ার।
পদ্ধতি:
পাঁচ মিনিট দুধ জ্বাল দিয়ে এতে চিনি ও কর্ণ ফ্লাওয়ার যুক্ত করুন। মিশ্রণটি ঠাণ্ডা করে ক্রিম এবং স্ট্রবেরি পিউরি যোগ করুন।সামান্য রঙও দিতে পারেন। এর পর আগের পদ্ধতি আনুসরন করে একে ফ্রীজারে জমান। বের করে ব্লেন্ড করে আবার ও জমতে দিন। এবার রেডি আপনার ফ্রেশ স্ট্রবেরি আইসক্রীম। কিছু স্ট্রবেরি টুকরো করে উপরে সাজিয়ে পরিবেশিন করুন ।

মটকা কুলফি

উপকরণ: দুধ, চিনি, জাফরান, কাজুবাদাম, ছোটো এলাচ গুঁড়া ও চারটি ছোট মাটির ছোট পাত্র।
পদ্ধতি:
দুধ ফুটিয়ে তিন ভাগের এক ভাগ পরিমাণ ঘন কোরে জ্বাল দিয়ে নিন। বেশি করে চিনি যোগ করুন। অল্প গরম দুধে জাফরান ভিজিয়ে তা জ্বাল দেয়া দুধের সাথে মিশিয়ে নিন। কাটা কাজুবাদাম, ছোটো এলাচ গুঁড়া মিশিয়ে চারটি ছোট মাটির পাত্রের মধ্যে মিশ্রণটি ঢেলে পাঁচ-ছয় ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রেখে জমান। তৈরি আপনার মটকা কুলফি!

চকলেট আইস ক্রিম

উপকরণ: দুধ, চিনি, , গ্রেটেড চকলেট (grated), তাজা ক্রিম, কর্ণ ফ্লাওয়ার,ভ্যানিলা নির্যাস
পদ্ধতি:
ফোটানো দুধে চকলেট মিশিয়ে নিয়ে জ্বাল দিয়ে চকলেট সস তৈরি করুন। অন্য পাত্রে দুধ, চিনি এবং কর্ণ ফ্লাওয়ার যোগ এর সাথে তৈরি করে রাখা সস করে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠাণ্ডা করে নিন। ক্রিম এবং ভ্যানিলা নির্যাস দিন। কিছু সময়ের জন্য মিশ্রণটি জমিয়ে বের করে দুই ভাগ করে প্রতি ভাগ আলাদা ভাবে ব্লেন্ড করুন। আবার ব্লেন্ড করা মিশ্রণটি ৬-৮ ঘন্টার জমতে দিন। উপরে আর কিছু চকলেট বা পছন্দ মত টপিং যোগ করে উপভোগ করুন!